ভাব-সম্প্রসারণ: মঙ্গল করিবার শক্তিই ধন বিলাস ধন নহে


মঙ্গল করিবার শক্তিই ধন বিলাস ধন নহে


মূলভাবঃ মানব কল্যাণে ব্যয়িত ধনই প্রকৃত ধন, বিলাসিতা, অপ্রয়োজনে ব্যয়িত ধন এবং যে সম্পদ মঙ্গলের উদ্দেশ্যে নয় তা প্রকৃত ধন নয়। তা কখনও তা ধন বলে বিবেচিত হতে পারে না।

সম্প্রসারিত ভাবঃ অর্থ মানবসেবায় ব্যয় হলেই এর প্রকৃত সদ্ব্যবহার হয়। নিজের সুখের জন্য বা বিশেষ খেয়াল চরিতার্থ করার জন্য যে অর্থ ব্যয় হয় তা নিছক স্বার্থপরতা ছাড়া আর কিছুই নয়। পৃথিবীতে অনেকেই অঢেল ধন-সম্পদের অধিকারী। কিন্তু প্রকৃত বিচারে তাদের সকল সম্পত্তিই ধন নয়। ধন-সম্পদের সার্থকতা নির্ভর করে তার সুষ্ঠু প্রয়োগের উপর। আর সুষ্ঠু প্রয়োগ নির্ভর করে ব্যক্তির ইচ্ছাশক্তির উপর। অনেকেই নিজের স্বার্থের কথা চিšতা না করে কেবল মানবকল্যাণে সচেষ্ট থাকেন। মানবকল্যাণের এ ইচ্ছা এবং সেই প্রেক্ষিতে ব্যয়িত অর্থ-সম্পদই প্রকৃত ধন। কেননা ধন তখনই ধন বলে বিবেচিত হয় যখন তা অন্যের কল্যাণে ব্যয়িত হয়। এ ধনের শেষ নেই, অবলুপ্তি নেই। এ ধন মনুষ্যত্বকে উজ্জীবিত করে জীবনকে সার্থক করে তোলে। মানব কল্যানের উদ্দেশ্যে অর্থ ব্যয়, গরিব, দুঃখীর পাশে দাঁড়ানো মানুষের মানবিক দায়িত্ব এবং মহৎ কাজ। তাইতো মহৎ ব্যক্তি হিসেবে হাজী মুহাম্মদ মুহসীনের নাম সর্ব্রাগ্রে স্মরনীয়। তিনি তাঁর সকল সম্পদ অকাতরে গরীব, আশ্রয়হীন মানুষের সেবায় বিলিয়ে দিয়েছেন।এজন্য তিনি মানুষের হৃদয়ে অমর হয়ে আছেন। কিন্তু আমাদের সমাজে অনেক লোক আছে যারা বিলাসিতার স্রোতে গা ভাসিয়ে দেয়। তারা শুধু নিজেদের আরাম-আয়েশ, সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের জন্যই ধন-সম্পদ ব্যবহার করে। অন্যদের দুঃখ-দুর্দশার কথা কখনও চিন্তা করে না। তাই তাদের এ ব্যয়িত অর্থ বিশেষ উদ্দেশ্য চরিতার্থ করলেও এর দ্বারা বিন্দুমাত্র মানবকল্যাণ সাধিত হয় না। কাজেই এ ধনকে প্রকৃত ধন বলা যায় না। জোয়ারের স্রোতের ন্যায় এ ধন প্রশান্তি দেয় না, দেয় না অমরত্ব লাভের গৌরব। জোয়ারের স্রোতের ন্যায় এ ধন উদ্বেল হয়ে আসলেও এক সময় তা নিঃশেষ হয়ে যায়।

মন্তব্যঃ অর্জিত ধন-সম্পদ কেবল নিজের বিলাসিতায় ব্যবহার না করে অšতত কিছু অংশ হলেও জনকল্যাণে ব্যবহার করা উচিত। তাহলেই সম্পদের সদ্ব্যবহার হবে।

0/Post a Comment/Comments