তেজগাঁও উন্নয়ন সার্কেল ঢাকা জেলার দোলাইপাড় এ প্রায় চার একর জমির উপর অবস্থিত । বাংলাদেশের এক মাত্র প্রশাসনিক সার্কেল তেজগাঁও উন্নয়ন সার্কেল । ঢাকা মহানগরি ঘিরে ১৭টি ইউনিয়নের প্রশাসনিক প্রান কেন্দ্র এই তেজগাঁও উন্নয়ন সার্কেল তার সকল ইউনিয়নের যোগাযোগ, অবকাঠামো উন্নয়ন সহ অনান্য সকল কর্মকান্ড তদারকি এবং প রিচালনা করে।
তেজগাঁও উন্নয়ন সার্কেলের নির্বাহী প্রধান হলেন সার্কেল অফিসার যিনি সার্কেলের আওতাধীন সকল কার্যাক্রম তদারকি করেন । বর্তমান সার্কেল অফিসার হলেন জনাব শাহনাজ সুলতানা সার্কেল অফিসার এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ।
মহানগর সংলগ্ন ১৭টি ইউনিয়ন গুলো হলো-
- শ্যামপুর ইউনিয়ন, তেজগাঁও
- দনিয়া ইউনিয়ন
- মাতুয়াইল ইউনিয়ন
- ডেমরা ইউনিয়ন
- সারুলিয়া ইউনিয়ন
- মান্ডা ইউনিয়ন
- দক্ষিণগাঁও ইউনিয়ন
- নাসিরাবাদ ইউনিয়ন
- বাড্ডা ইউনিয়ন
- ভাটারা ইউনিয়ন, তেজগাঁও
- সাতারকুল ইউনিয়ন
- বেরাইদ ইউনিয়ন
- সুলতানগঞ্জ ইউনিয়ন
- দক্ষিণখান ইউনিয়ন
- উত্তরখান ইউনিয়ন
- ডুমনী ইউনিয়ন
- হরিরামপুর ইউনিয়ন, তেজগাঁও
অত্র কার্যালয় হতে ঢাকা মহানরের এই ১৭টি ইউনিয়নের উন্নয়ন কর্মকান্ডসহ মহানগরীর ত্রান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সমম্বয় করা হয় । বর্তমান অত্র কমপ্লেক্স অবস্থিত অন্যান্য দপ্তরগুলো হলোঃ
**** মেট্রো পলিটন কৃষি অফিসারের কার্যালয় ।
**** প্রকল্প বাস্থবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়।
*** থানা প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা কার্যালয় (মেট্রো) ।
**** উপজেলা পল্লী উন্নয়ন অফিসারের কার্যালয় ।
**** উপ-সহকারী জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীর কার্যালয় ।
**** থানা পরিসংখ্যান কর্মকর্তার কার্যালয় ।
**** ডেমরা থানা নির্বাচন অফিসারের কার্যালয় ।
**** পরিবার পরিকল্পনা ক্লিনিক ।
প্রখ্যাত ব্যক্তিত্ব
খাজা সলিমুল্লাহ বা নবাব সলিমুল্লাহ (জন্ম: জুন ৭;১৮৭১-মৃত্যু:জানুয়ারি ১৬;১৯১৫) ঢাকার নবাব ছিলেন। তার পিতা নবাব খাজা আহসানউল্লাহ ও দাদা নবাব খাজা আব্দুল গনি তিনি নিখিল ভারত মুসলিম লীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। এমনকি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জন্য তিনি ঢাকার রমনা এলাকায় নিজ জমি দান করেন।
বঙ্গভঙ্গ এবং খাজা সলিমুল্লাহ:
১৯০৩ সালে বড় লাট লর্ড কার্জন ঢাকায় সফরে এলে নওয়াব সলিমুল্লাহ পূর্ব বাংলার সমস্যাগুলো তুলে ধরেন। ওদিকে আসামের উৎপাদিত চা ও অন্যান্য পণ্য বিদেশে রপ্তানীর ব্যাপারে পরিবহন ব্যয় হ্রাসের উদ্দেশ্যে কোলকাতার বদলে চট্টগ্রামবন্দর ব্যবহারের চিন্তা করে বৃটিশরা, এই সাথে বেঙ্গল প্রেসিডেন্সীর প্রশাসন বিকেন্দ্রীকরণের ভাবনাও চলতে থাকে। বৃটিশদের বাণিজ্যিক স্বার্থ এবং নবাবের আবেদন যুক্ত হয়ে খুব অল্প সময়ের ব্যবধানে বাংলা বিভাজনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এর প্রেক্ষিতে কলকাতা কেন্দ্রিক বুদ্ধিজীবি ব্যবসায়ীদের তীব্র প্রতিবাদ সত্বেও ১৯০৫ সালে পূর্ব বঙ্গ ও আসাম নিয়ে একটি স্বতন্ত্র প্রদেশ গঠন করা হল।বঙ্গ ভঙ্গ নিয়ে বাঙ্গালী হিন্দুদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।
মুসলিম লীগ গঠন:
১৮৭৭ সালে আমীর আলীর উদ্যোগে ‘সেন্ট্রাল মোহামেডান এ্যাসোসিয়েশন’ গঠনের সাথে স্যার সৈয়দ আহমদ দ্বিমত পোষণ করেন। তিনি মুসলমানদেরকে রাজনীতি থেকে বিরত থাকার উপদেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু কংগ্রেস আত্মপ্রকাশ করার পর হিন্দি এবং উর্দুর বিরোধ সৃষ্টি হলে মুসলমানদের স্বার্থের ব্যাপারে সৈয়দ আহমদ সচেতন হয়ে উঠেন এবং ১৮৮৯ সালে রাজনৈতিক সংগঠনের ব্যাপারে আগ্রহী হয়ে ‘ইউনাইটেড ন্যাশনাল ডিফেন্স এ্যাসোসিয়েশন’ গঠন করেন (১৮৮৯)। ১৮৯৩ সালে উত্তর ভারতে মোহমেডান ‘এ্যাংলো ওরিয়েন্টাল ডিফেন্স অরগানাইজেশন অব আপার ইনডিয়া’ গঠিত হয়। ১৯০৩ সালে সাহরানপুরে মুসলিম রাজনৈতিক সংস্থা গঠিত হয়। ১৯০৬ সালের ফেব্রুয়ারীতে পাঞ্জাবে ‘মুসলিম লীগ’ নামে একটি রাজনৈতিক সংস্থা গঠিত হয়। এদিকে বঙ্গভঙ্গের প্রতিক্রিয়ায় সমগ্র ভারত জুড়ে হিন্দু জনগোষ্ঠীর প্রতিবাদ এবং মুসলিম বিদ্বেষের ঝড় বয়ে যাওয়ায় স্যার সলিমুল্লাহকে দারুণভাবে ভাবিয়ে তোলে। তিনি সর্বভারতীয় পর্যায়ে মুসলিম ঐক্যের কথা ভাবতে শুরু করেন। ১৯০৬ সালের নভেম্বরে সলিমুল্লাহ সমগ্রভারতের বিশিষ্ট নেতৃবৃন্দের নিকট পত্রালাপে নিজের অভিপ্রায় তুলে ধরলেন এবং সর্বভারতীয় মুসলিম সংঘের প্রস্তাব রাখলেন। ১৯০৬ সালের ২৮-৩০শে ডিসেম্বর সর্বভারতীয় শিক্ষা সম্মেলন আহুত হল। শাহবাগে অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে সমগ্র ভারতের প্রায় ৮ হাজার প্রতিনিধি যোগ দিলেন। নবাব সলিমুল্লাহ ‘অল ইন্ডিয়া মুসলিম কনফেডারেন্সী’ অর্থাৎ সর্বভারতীয় মুসলিম সংঘ গঠনের প্রস্তাব দেন; হাকিম আজমল খান, জাফর আলী এবং আরো কিছু প্রতিনিধি প্রস্তাবটিকে সমর্থন করেন। কিছু প্রতিনিধির আপত্তির প্রেক্ষিতে কনফেডারেন্সী শব্দটি পরিত্যাগ করে লীগ শব্দটিকে গ্রহণ করা হয়। অবশেষে সলিমুল্লাহর নেতৃত্বে অল ইন্ডিয়া মুসলিম লীগ গঠিত হয়। ঢাকায় এই ঐতিহাসিক সম্মেলনে বঙ্গভঙ্গ সমর্থন এবং বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনের নিন্দা করা হয়। এ সংগঠনের ব্যাপারে শুরু থেকেই হিন্দু জনগোষ্ঠী বিরূপ অবস্থান নেয়। সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জী সম্পাদিত দি বেঙ্গলীপত্রিকা নবগঠিত মুসলিম লীগকে সলিমুল্লাহ লীগ হিসেবে অভিহিত করে।
Post a Comment