আপনার কি মাঝে মধ্যেই পেটে ব্যথা হচ্ছে বা হঠাৎ হঠাৎ মাথার যন্ত্রণা? পর্যাপ্ত ঘুমানোর পরও অল্পতেই ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন? এ সবের কারণ হতে কৃমি। কিন্তু কী করে বুঝবেন, আপনার শরীরে কৃমি বাসা বেঁধেছে কিনা? আসুন চিনে নেওয়া যাক এমনই কয়েকটি উপসর্গ-
কৃমির লক্ষণ:
♦) ঘুমনোর সময়ে মুখ থেকে লালা পড়া,
♦) মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়ার ইচ্ছা অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে যাওয়া,
♦) আঘাত না লাগা সত্ত্বেও মাড়ি থেকে রক্তপাত হওয়া,
♦) সামান্য পরিশ্রমেই ক্লান্ত হয়ে পড়া,
♦) ত্বকে ঘন ঘন র্যাশ বা চুলকুনির সমস্যা তৈরি হওয়া,
♦) খাওয়ার ব্যপারে অনিহা বা খিদে না পাওয়া,
♦) গা-হাত-পা ব্যথা বা দুর্বল বোধ করা,
♦) ঘুমিয়ে পড়ার পরেও চোখ আংশিক খোলা থাকা ইত্যাদি।
কৃমির সমস্যা বাড়লে শরীরে রক্তাল্পতা এবং আয়রন ডেফিশিয়েন্সির আশংকা অনেকটাই বেড়ে যায়। কৃমি থাকলে শরীরে রক্তের পরিমাণ কমতে কমতে অ্যানিমিয়া পর্যন্ত হতে পারে। কৃমির জন্য স্মৃতিভ্রম হওয়ার আশংকাও রয়েছে। শিশু অমনোযোগী হয়ে পড়তে পারে। কৃমির সমস্যা থাকলে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে শিশুর বাড়-বৃদ্ধিও।
একাধিক গবেষণায় জানা গিয়েছে, প্রায় ৮৫ শতাংশ মানুষের পেটেই কৃমি থাকে। তবে শরীরে কৃমির মাত্রা বেড়ে গেলেই উপরে উল্লেখিত লক্ষণগুলি প্রকট হয়। মার্কিন চিকিৎসক আব্রাম বের-এর মতে, খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন ও নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে কৃমির সমস্যা সহজেই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। হজমের সমস্যা কমিয়ে, খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনতে পারলে কৃমির সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব। বেশ কয়েকটি ঘরোয়া উপায় কাজে লাগিয়ে কৃমির সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া যেতে পারে। আসুন সেগুলি সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক…
কৃমির সমস্যায় কার্যকরী ঘরোয়া সমাধান:
কাঁচা রসুন: কাঁচা রসুনে প্রায় ২০ ধরনের ব্যাকটেরিয়া এবং ৬০ ধরনের ফাংগাস মেরে ফেলার ক্ষমতা রয়েছে। তাই শিশুকে নিয়মিত কাঁচা রসুনের কুচি খাওয়ানোর অভ্যাস করুন। উপকার পাবেন।
আদা: আদা হজমের সমস্ত রকমের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে অত্যন্ত কার্যকরী একটি উপাদান। হজমের সমস্যা, অ্যাসিডিটি, পেটে ইনফেকশন ইত্যাদি দূর করতে আদার জুড়ি মেলা ভার। শিশুকে সামান্য পরিমাণে কাঁচা আদার রস খালি পেটে খাওয়াতে পারলে কৃমির সমস্যায় দ্রুত ফল পাবেন।
পেঁপে: পেটের সমস্যা দূর করতে পেঁপে অত্যন্ত কার্যকরী একটি উপাদান। যে কোনও ধরনের কৃমি সমস্যায় পেঁপের বীজ দুর্দান্ত কার্যকর। কৃমির সমস্যায় দ্রুত ফল পেতে পেঁপে এবং মধু মিশিয়ে শিশুকে খাওয়াতে পারেন।
কাঁচা হলুদ: কাঁচা হলুদ আমাদের শরীরে অ্যান্টিবায়োটিকের কাজ করে। কৃমির সমস্যার সমাধানে এটি অত্যন্ত কার্যকরী একটি উপাদান।
শশার বীজ: ফিতাকৃমির সমস্যা দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনতে শশার বীজ অত্যন্ত কার্যকর। শশার বীজকে শুকিয়ে গুঁড়ো করে প্রতিদিন এক চামচ করে খাওয়া গেলে কৃমির সমস্যায় দ্রুত ফল পাওয়া সম্ভব।
উল্লেখিত টোটকাগুলি কর্যকর হলে শিশুকে এগুলির কোনওটি একটানা বেশি দিন খাওয়ানো উচিৎ নয়। সমস্যা বাড়াবাড়ির পর্যায়ে চলে গেলে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মেনে সন্তানের চিকিত্সা শুরু করুন।
Post a Comment