সাভার উপজেলা পরিচিত



উপজেলা প্রশাসনের পটভূমি

বাংলাদেশ উপজেলা পর্যায় স্থানীয় সরকারের ইতিহাস মোটেও প্রাচীন নহে। ১৯৫৯ সালে মৌলিক গণতন্ত্র প্রবর্তনের পর উপজেলা পর্যায় থানা কাউন্সিল গঠিত হয়। তৎকালীন মহকুমা প্রশাসন পদাধিকার বলে থানা কাউন্সিল এর চেয়ারম্যান হতেন। থানায় কর্মরত সার্কেল অফিসার উন্নয়ন পদাধিকার বলে ভাইস-চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন। উন্নয়ন কাউন্সিল ও টাউন কমিটির চেয়ারম্যানগণ পদাধিকার বলে থানা কাউন্সিল এর সদস্য হতেন। জেলা প্রশাসক কর্তৃক মনোনীত কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্খ্য, মৎস্য ও সমবায় বিভাগের কর্মকর্তারগণ কর্মকর্তা সদস্য ছিলেন। তৎকালীন থানা কাউন্সিলের অন্যতম কাজ ছিল ইউনিয়ন কাউন্সিল ও টাউন কমিটির কাজের তদারকীকরন এবং সমন্বয় সাধন। স্বাধীনতা পরবর্তী গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশে রাষ্ট্রপতির ৭নং আদেশ দ্বারা উক্ত থানা কাউন্সিল এর নাম পরিবর্তন করে থানা উন্নয়ন কমিটি গঠন করা হয়। মহকুমা প্রশাসকগণ পদাধিকার বলে চেয়ারম্যান এবং সার্কেল অফিসার (উন্নয়ন) থানা উন্নয়ন কমিটির ভাইস-চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। মহকুমা প্রশাসক থানা উন্নয়ন কমিটির চেয়ারম্যান থাকলেও তার পক্ষে সভায় অংশ গ্রহণ করা সম্ভব হতোনা বিধায় সার্কেল অফিসার উন্নয়ন প্রায়শঃ চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করতেন। পরবর্তীতে ১৯৮২ সালে স্থানীয় সরকার অধ্যাদেশের মাধ্যমে উপজেলা পর্যায়ে স্থানীয় সরকারেরর কাঠামো গুনগত পরবর্তন ঘটে। থানাকে উপজেলা হিসেবে নামকরন করা হয় এবং প্রতিটি উপজেলায় একটি করে উপজেলা পরিষদ গঠন করা হয়। এর ধারাবাহিকতায় উপজেলা প্রশাসনের সৃষ্টি।


সাভার বাংলাদেশের ঢাকা বিভাগের ঢাকা জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা এটি রাজধানী শহর ঢাকা হতে প্রায় ২৪ কিলোমিটার উত্তরে (গুলিস্তান জিরো পয়েন্ট থেকে সড়ক পথের দূরত্ব) অবস্থিত বাংলাদেশের অন্যতম বড় শহর এবং ঢাকা মেগাসিটির অন্তর্ভুক্ত এলাকা।

সাভার থানা ১৯১২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি ১৯৮১ সালে একটি উপজেলায় পরিণত হয়। বর্তমানে সাভার উপজেলা ২ টি থানায় বিভক্ত; যার একটি হচ্ছে সাভার মডেল থানা এবং অন্যটি আশুলিয়া থানা। এ উপজেলার একমাত্র পৌরসভা হল সাভার পৌরসভা।
ভাষা ও সংস্কৃতি




সাভার উপজেলার ভূ-প্রকৃতি ও ভৌগলিক অবস্থান এই উপজেলার মানুষের ভাষা ও সংস্কৃতি গঠনে ভূমিকা রেখেছে।

বাংলাদেশের রাজধানী জেলায় অবস্থিত এই উপজেলার ভাষার মূল বৈশিষ্ট্য বাংলাদেশের অন্যান্য উপজেলার মতই, তবুও কিছুটা বৈচিত্র্য খুজে পাওয়া যায়। যেমন কথ্য ভাষায় মহাপ্রানধ্বনি অনেকাংশে অনুপস্থিত, অর্থাৎ ভাষা সহজীকরনের প্রবনতা রয়েছে। সাভার উপজেলার আঞ্চলিক ভাষার সাথে সন্নিহিত ঢাকা শহরের অনেকটা সাযুজ্য রয়েছে।

মানুষের আচার আচরন, খাদ্যাভাষ, ভাষা, সংস্কৃতিতে রাজধানী ঢাকা শহরের সংস্কৃতির ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।

এই এলাকার ইতিহাস পর্যালোচনায় দেখা যায় যে, ঢাকা সভ্যতা বহুপ্রাচীন।

এলাকায় প্রাপ্ত পত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন প্রাচীন সভ্যতার বাহক হিসাবে দেদীপ্যমান। সাংস্কৃতিক পরিমন্ডলে সাভার উপজেলার যাত্রাগান, পালাগান, কীর্তনের অবদান ও অনস্বীকার্য। 


উপজেলার ভৌগলিক পরিচিতি:সাভার উপজেলা  ২৩.৮৫৮৩° উত্তরে এবং ৯০.২৬৬৭° পূর্বে অবস্থিত। এখানে প্রায় ৬৬,৯৫৬ টি পরিবার বসবাস করছে এবং এর সামগ্রিক আয়তন হচ্ছে ২৮০.১২ বর্গ কিলোমিটার। এটি উত্তরে কালিয়াকৈর উপজেলা এবং গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন দক্ষিণে কেরানীগঞ্জ উপজেলা পূর্বে মিরপুর মোহাম্মদপুর পল্লবী থানা এবং উত্তরা থানা এবং পশ্চিমে ধামরাই উপজেলা এবং সিংগাইর উপজেলা দিয়ে বেষ্টিত। সাভারের ভূমি প্লেইস্টোসিন সময়সীমার পাললিক মাটি দ্বারা গঠিত। ভূমির উচ্চতা পূর্ব থেকে পশ্চিমে ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পেয়েছে।সাভারের দক্ষিণাংশ বংশাই এবং ধলেশ্বরী নদীর পলল দ্বারা গঠিত। এখানকার প্রধান নদীসমূহ হচ্ছে বংশী (বংশাই), তুরাগ, ধলেশ্বরী। এছাড়াও বৃড়িগঙ্গা ও গাজীখালী নামে আরো দুটি নদী রয়েছে। বর্তমানে বিভিন্ন শিল্প-কারখানা ও ট্যানারী শিল্পের বর্জ্যের কারনে নদীগুলো মারাত্বকভাবে দূষিত হয়ে পড়ছে এবং দখলের কারনে এসব নদীর অস্তিত্ব ক্রমাগত হুমকির সম্মুখীন।এখানে ১০,৫৫১.১৮ হেক্টর পতিত জমি ছাড়াও মোট আবাদি জমির পরিমাণ হচ্ছে ১৬,৭৪৫.৭১ হেক্টর।

খেলাধুলা ও বিনোদনে সাভার

খেলাধুলায় সাভার:

দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের মত সাভার উপজেলার মানুষেরাও প্রাচীন কাল থেকে নানান ধরণের খেলাধুলা ও বিনোদনের দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করে। খেলাধুলাগুলো অতি প্রাচীন এবং এগুলি স্থলে-জলে এমনকি আকাশেও বিদ্যমান ছিল। যুগের পরিবর্তনে এই খেলাগুলি বিবর্তিত হয়েছে এবং কিছু কিছু বর্তমান সময়ে দারুণ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। একসময়ের এক্কাদোক্কা বা বাঘবন্দি, ষাঁড়ের লড়াই, মোরগের লড়াই, ডাংগুলি, ষোলগুটি খেলা থেকে শুরু করে আজকের অতি জনপ্রিয় ফুটবল ও ক্রিকেট খেলার আবির্ভাব ঘটেছে। তেমনি নদীতে নৌকাবাইচ, জলকুমির, সাঁতার, আকাশে ঘুড়ি ও পায়রা উড়ানো, বুলবুলির লড়াই।

এছাড়া বাংলাদেশের অন্যতম ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিকেএসপি ( বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান) অত্র সাভার উপজেলার শিমুলিয়া ইউনিয়নে অবস্থিত।

যোগাযোগের জন্য অত্র প্রতিষ্ঠানের ওয়েব সাইটটি নিচে দেওয়া হল।

****বিকেএসপি***** http://www.bksp-bd.org/



বিনোদনে সাভার:

বিনোদনের দৃষ্টান্ত হিসেবে পালাগান, যাত্রা, লোকসংগীত, থিয়েটার, সিনেমা এবং অধুনা টেলিভিশন। বিনোদন কেন্দ্রের অংশ হিসাবে সাভারে রয়েছে ৩ টি সিনেমা হল, ২ টি বিনোদন পার্ক, ১ টি মিনি চিড়িয়াখানা, ১ টি গল্ফ ক্লাব।

সিনেমা হলগুলো হলো:

১. বিলাস সিনেমা হল : এটি সাভার বাজার রোডে অবস্থিত। এটি সাভার বাসস্ট্যান্ড হতে কিছুটা পশ্চিমে অবস্থান করছে।

২. সাভার সেনা অডিটরিয়াম : এই সিনেমা হলটি নবীনগরে অবস্থান করছে।

৩. চন্দ্রিমা সিনেমা হল: এই সিনেমা হলটি ই.পি.জেড এ অবস্থান করছে।



বিনোদন পার্ক:

১. ফ্যান্টাসী কিংডম (এটি ঢাকা-আশুলিয়া মহাসড়কের পাশে জামগড়াতে অবস্থিত)

২.নন্দন পার্ক (এটি নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের পাশে বাড়ইপাড়াতে অবস্থিত।




মিনি চিড়িয়াখানা: এটি ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশে সিনবি তে অবস্থিত।



গল্ফক্লাব: এটি ঢাকা আরিচা মহাসড়কের পাশে নবীবনগরে অবস্থিত।

ইতিহাসের প্রেক্ষাপটে সম্ভার থেকে সাভার
”বংশাবতীর পূর্বতীরে সর্বেশ্বর নগরী
বৈসে রাজা হরিশ্চন্দ্র জিনি সুরপুরী।”
ছড়াটিতে বংশাবতী বলতে আজকের বংশী ও সেকালের বংশাবতী নদীকেই বুঝাচ্ছে। যার পূর্বতীরে সর্বেশ্বর নগরী। এই নগরীর রাজা হরিশ্চন্দ্র। এ সময় তাঁর রাজ্য ছিল সুখ শান্তিতে ভরপুর। এই সুখময় রাজ্য সর্বেশ্বর নগরীর অপভ্রংশই আজকের সাভার। আবার কারো কারো মতে ইতিহাস খ্যাত পাল বংশীয় রাজা হরিশ্চন্দ্রের সর্বেশ্বর রাজ্যের রাজধানীর নাম ছিল সম্ভার এবং সম্ভার নাম থেকেই সাভার নামের উৎপত্তি। সাভার অতি প্রাচীন স্থলভূমি। ঢাকা ইতিহাসে দেখা যায় ধলেশ্বরী এবং বংশী নদীর সঙ্গম স্থলে বংশী নদীর পূর্বতটে ঢাকা থেকে ১৩ মাইল বায়ু কোনে অবস্থিত সাভার। খৃষ্টীয় অষ্টম শতাব্দী পর্যন্ত এই স্থান সম্ভাগ বা সম্ভাস প্রদেশের রাজধানি ছিল। ঢাকার ধামরাইয়ের উত্তর পশ্চিম কোনে সম্ভাগ নামে যে ক্ষুদ্র পল্লী আছে তা আজো সম্ভাগ প্রদেশের অতীত স্মৃতি বহন করে। বৌদ্ধ নৃপতিগণের শাসনাধীনে প্রাচীন সম্ভাগ তার বিপুল বৈভব ও প্রতাপে পরিপূর্ণ ছিল। সাভার বা সম্ভার নামের পূর্ব কথন বলে অনেক ঐতিহাসিক এই মতের সমর্থন করেন।যেহেতু বৌদ্ধ আমলের অসংখ্য বৌদ্ধ ধ্বংসস্তুপ ও বৌদ্ধ মূর্তি সাভার এলাকার মাটির নিচে আবিস্কৃত হয়েছে এবং আজও হচ্ছে সেহেতু ধরে নেয়া যায় যে বৌদ্ধ শাসনামলে এই শহর গড়ে উঠেছিল। গৌতমবুদ্ধ অথবা মৌয্য বংশের শ্রেষ্ঠ সম্রাট আশোকের সময়ও যদি এই রাজ্যের পত্তন হয়ে থাকে তবুও আজকের সাভারের বয়স দুই হাজার দুইশত বছরের অধিক। হরিশচন্দ্র পালই রাজা হরিশচন্দ্র নামে সাভারের সিংহাসনে আরোহন করেন। রাজা হরিশচন্দ্রের রাজবাড়ী সাভারের পূর্বপাশে রাজাশন গ্রামের অবহেলিত এক কোনে মাটির নিচে চাপা পরে আছে। রাজাশনের আশপাশে লুপ্তপ্রায় বহু দিঘী, বৌদ্ধ স্থাপত্যের নিদর্শন রাজোদ্যান,খাল,পরিখা আজও কালের সাক্ষী হয়ে বিরাজমান। রাজার সেনানিবাস কোঠাবাড়ী সাভারের উত্তর পাশে অবস্থিত। রাজা হরিশ্চন্দ্রের এক রানী কর্ণবতীর নামে কর্ণপাড়া এবং অপর মহিষী ফুলেশ্বরীর নামে রাজফুলবাড়ীয়া সাভারের দক্ষিনে এক মাইল অন্তর অবস্থিত।দ্বাদশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে বিজয় সেন পাল বংশকে সমূলে ধ্বংস করে বাংলার সিংহাসনে বসেন। তার অত্যাচারে বৌদ্ধরা হয় মৃত্যবরণ করেন নতুবা দেশ ত্যাগে বাধ্য হন। কথিত মতে প্রাচীন সম্ভার রাজ্য ধ্বংস প্রাপ্ত হয়। এ সময় এ স্থান স্বর্বেশ্বর নগরী নামে প্রসিদ্ধি লাভ করে এবং ধর্মান্তরিত অবস্থায় পাল বংশীয় লোকেরাই সাভার শাসন করতে থাকে।ময়নামতির তান্ত্রিক মহারানীর পুত্র গোপীনাথের সঙ্গে হরিশচন্দ্র রাজার জেষ্ঠা কন্যা অনুদার বিয়ে এবং কনিষ্ঠ কন্যা পদুনাকে যৌতুক প্রদানের গল্প কাহিনী সাভারের অনেকের কাছেই শোনা যায়। হরিশচন্দ্রের দ্বাদশ পুরুষ শিবচন্দ্র রায় তার শেষ জীবন কাশী গয়ায় অতিবাহিত করে প্রয়াত হন। শিবচন্দ্রের একাদশ পুরুষ তরুরাজ খাং এর প্রথম ও দ্বিতীয় পুত্র শুভরাজ ও যুবরাজ হুগলীতে চলে যান। তৃতীয় ও চতুর্থ পুত্র বুদ্ধিমন্ত ও ভাগ্যমন্ত পবিত্র ইসলাম ধর্ম গ্রহন করেন। তাদের এক বংশধর সিদ্ধ পুরুষ খ্যাতি লাভ করেন এবং তার সমাধী কোন্ডা গ্রামে খন্দকারের দরগা নামে আজও বিদ্যমান।আরব উপত্যকায় সমুদ্র উপকূলবর্তী সাবাহ রাজ্যের (অর্থাৎ আজকের ইয়েমেন) প্রায় সাড়ে তিন হাজার বছর আগে ব্যবসা বাণিজ্যে বিশ্বজোড়া নাম ছিল। গ্রীক ঐতিহাসিকদের বিবরণিতে জানা যায় সাবাহর ব্যবসায়ীরা চীন, জাপান এবং কোরিয়ার সঙ্গে ব্যবসা করতো। সেই সময় আজকের সাভার ছিল সমুদ্র উপকূলবর্তী নগর। আসা যাওয়ার পথে সাবাহর ব্যবসায়ীরা বাণিজ্যতরীর নোঙ্গর ফেলতো সাভারের উপকূলে। সে সময় সাভার 'সাবাহর' নামে পরিচিতি লাভ করে। 'সাবাহর' অর্থাৎ স্বয়ম্ভর নগরী যেখানে সবকিছু পাওয়া যায়। সম্ভার, সভর, সম্ভোগ, সাবাহ-উর সব কয়টি নামের অর্থ সাদৃশ্যপূর্ণ অর্থাৎ স্বয়ম্ভর, স্বয়ংসম্পূর্ণ, আত্ননির্ভরশীল। তাই ইতিহাস থেকে বলা যায় সাভার অতি প্রাচীনকাল থেকেই সমৃদ্ধ এক অঞ্চল ছিল।সাভারে সর্বপ্রথম শিক্ষা ব্যবস্থার সূচনা করেন রাখাল চন্দ্র সাহা। তিনি তাঁর পিতার নামে অধরচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি মাতার নামে ছেলেদের থাকার বোর্ডিং, কাকার নামে মহেশচন্দ্র দাতব্য চিকিৎসালয় প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি সাভারের দানবীর নামে পরিচিত।১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর আশুলিয়া থানার জিরাবো এলাকার ঘোষবাগ-গঙ্গাবাগে নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চুর নেতৃত্বাধীন একদল মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে পাকিস্তানি সেনাদের সম্মুখযুদ্ধ হয়। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রবল আক্রমণের মুখে পাকিস্তানি বাহিনীর অনেকে নিহত হয়। আত্মরক্ষার্থে অন্যরা পালিয়ে যায়। শত্রুমুক্ত ঘোষণা করা হয় সাভারকে। ওই যুদ্ধে গোলাম মোহাম্মদ দস্তগীর টিটু নামের এক অকুতোভয় কিশোর শহীদ হন। সাভার ডেইরি ফার্ম গেটের কাছে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশে তাঁকে সমাধিস্থ করা হয়। বাংলাদেশ আর্মি তার প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের জন্য একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করে।সাপের বাজারসাভারের পোড়া বাড়ীতে প্রতিদিন ছোট-বড় নানা জাতের সাপ বেচাকেনার হাট বসে। ক্রেতা-বিক্রেতাদের অধিকাংশই বেদে সম্প্রদায়ের। ময়মনসিংহ, শেরপুর, ও মধুপুরের পাহাড়ি এলাকার গারো এবং উত্তরাঞ্চলের সাওতালরাও বাড়তি রোজগারের জন্য এ হাটে সাপ বিক্রি করতে আসেন। মাঝেমধ্যে বিদেশিরাও আসেন সাপ কিনতে।এ হাটে ১৫ থেকে ২০ জন বেদে প্রতিদিন ৫০ থেকে ৬০ টি বিভিন্ন জাতের সাপ বিক্রি করেন। গোখরা ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা, দাড়াশ ২০০ থেকে ৩০০ টাকা, অজগর এক হাজার থেকে সাত হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। লাইডগা, কেউটে, কালনাগিনী, কাটা দুবল ও শঙ্খিনী ১০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়ে থাকে। মাঝেমধ্যে দাম বেশ উঠা-নামা করে। তবে বর্তমানে প্রয়োজনীয় সুযোগ সুবিধার অভাবে বেদেরা পেশা পরিবর্তন করে অন্য পেশায় চলে যাচ্ছে।




ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোডআয়তন (একর)লোকসংখ্যাশিক্ষার হার (%)
পুরুষমহিলা
আমিনবাজার ১৫২৭০৩১৫৬৯৪১৪২৯৭৪৫.৩৬
আশুলিয়া ১৮৬৪৫১২২৫০৫১৯৪৩৯৫৬.৪৯
ইয়ারপুর ৯৪৬৫৬৩১৩৯১৮১১৬৯৪৫৪.৮৮
কাউন্দিয়া ৫০২৮৩৫১০৩৮৬৯৬৭৯৫২.৬৫
তেঁতুলঝোড়া ৮৯৩৮৪৩২৩৪২৪১৮৫৫৪৫১.৭৬
ধামসোনা ৩৯৮০৯৮৪০৪১৯৩৬৪৮৩৬৬.০০
পাথালিয়া ৭২৭১০২৩৪৭০৭৩০০৯৯৬৩.৭৫
বনগ্রাম ২২৪৪৬০১৩৩০৮১১৪৩৪৪৪.১১
বিরুলিয়া ৩৩৭৪৪৮১২৭২৬১১০৩৪৪৩.৬৬
ভাকুর্তা ৩৩৫২০২১৯২২০১৭০৮৮৩৯.৪৯
শিমুলিয়া ৮৩৮৫৬৪২২৩৬২১৯১৬৭৪৬.২১
সাভার ৭৮১৩৬৫৮৭৯৭৮০৫৪৬০.৭১

এক নজরে সাভার উপজেলা

সাধারণ তথ্য
উপজেলার প্রতিষ্ঠা                                                                 :       ১৯৮১ খ্রিঃ
 আয়তন                                                                            :       ২৮০.১২    বর্গ কিঃ মিঃ
 অবস্থান                                          :       ২৩°৪৪র্ উত্তর হতে ২৪°০২র্ ৯০°১১র্ পূর্ব হতে ৯০°২২র্
সীমানা                                                                              :       উত্তরে-কালিয়াকৈর ও গাজীপুর সদর
                                                                                                               দক্ষিণে-কেরাণীগঞ্জ ও নবাবগঞ্জ
                                                                                                               পূর্বে-মিরপুর, মোহাম্মাদপুর, পলস্নবী ও উত্তরা
                                                                                                               পশ্চিমে-সিঙ্গাইর ও ধামরাই
 নদ-নদী                                                                              :       বংশাই, তুরাগ, ধলেশ্বরী
 লোকসংখ্যা (২০১১ সনের আদমশুমারী অনুযায়ী)              
                পুরুষ                                                                                :       ৭৬৯১১৭   জন                   
                মহিলা                                                                               :       ৬৭৩৭৬৮   জন
                মোট                                                             :       ১৪৪২৮৮৫   জন (ঘনত্ব ৪৯৪৮ জন প্রতি বর্গ কিঃ মিঃ)
                নারী-পুরম্নষ অনুপাত                                                         :       ১০০: ১১৮
                মুসলিম                                                                         :       ৯১.৩৮%
                হিন্দু                                                                             :       ৭.৭৪%
                অন্যান্য                                                                         :       ০.৮৮%

শিক্ষা সংক্রান্ত তথ্যঃ
শিক্ষার হার      (৭বছর+)                                                      :       ৬৮.০%
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান                                                                    :       ৩৫৬ টি
                প্রাথমিক বিদ্যালয়                                                            :       ১২৮ টি
                জুনিয়র বিদ্যালয় (নিঃ মাঃ বিদ্যাঃ)                                       :       ০৬ টি
                উচ্চ বিদ্যালয় (মাঃ বিঃ)                                                     :       ৪৬ টি
                উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়                                                      :       ০৭ টি
                স্কুল এন্ড কলেজ                                                               :       ০৮ টি
                কলেজ                                                                          :       ১০ টি
                দাখিল মাদরাসা                                                               :       ০৫ টি
                আলিম মাদরাসা                                                              :       ০৪ টি
                ফাজিল মাদরাসা                                                             :       ০২ টি
                প্রাথমিক/এবতেদায়ী মাদ্রাসা                                               :       ১২ টি
                সরকার কর্তৃক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত এঃ মাঃ                                      :       ০২ টি
                সরকার কর্তৃক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত এঃ মাঃ                                      :      ০২ টি
                সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়                                                :       ৮৮ টি
                রেজিঃ প্রাথমিক বিদ্যালয়                                                  :       ১২ টি
                কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়                                             :       ১৪ টি
                অস্থায়ী রেজিঃ বেঃ প্রাথমিক বিদ্যালয়                                  :       ০৩ টি
                উচ্চ বিঃ সংলগ্ন প্রাঃ প্রাথমিক বিদ্যালয়                                 :      ১০ টি
            পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়                                                      : ০১ টি (জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়)              
কৃষি বিষয়ক তথ্য

        মোট জমি                                                         :       ২৮০১৩ হেক্টর
        কৃষি জমি                                                          :       ১৭৮২০   ’’
        নীট ফসলি জমি                                                  :       ১৭৫৮০   ’’
        অনাবাদি জমি                                                    :       ২৪০       ’’
        শস্যের নিবিড়তা                                                 :       ২০৬ %
        সেচের আওতাভুক্ত জমি                                        :       ৬৯   %
        চাল/গম উৎপাদন                                                :       ৬০৪৯০ মেঃ টন     
        চাল/গম ঘাটতি                                                  :       (-) ৬২০৪৪ মেঃ টন
        ভূমিহীনের সংখ্যা                                               :       ১৬৯১৪ কৃষি পরিবারমোট কৃষি জমি (হেক্টর)
        মোট কৃষি জমি (হেক্টর)                                        :       ১৭৮২০       
        আবাদযোগ্য জমি (হেক্টর)                                      :       ১৭৫৮০
        সবজি (টন) (শীত + গ্রীস্ম)                                     :       শীত-৪০১৬১ মেঃ টন
        গ্রীস্ম-                                                                :        ৪০১৫১ মেঃ টন
        কাঁঠাল (মেঃ টন)                                                 :       ৪৮৪০০
        কলা (মেঃ টন)                                                    :       ৩৫১০

প্রাণীসম্পদ

        ডেইরী ফার্ম                                                           :       ০১ টি 
        মুরগীর খামার                                                         :       ৪৩৪ টি
        ছাগলের খামার                                                       :       সরকারী-০১ টি, বেঃ সঃ -২১ টি
        বিএলআরআই                                                         :       ১ টি

স্বাস্থ্য সংক্রান্ত তথ্য
সরকারী হাতপাতাল                                   :       উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্স সরকারী ১টি (৫০ শয্যা বিশিষ্ট)
            উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র                                         :      ০২টি
            ইউনিয়ন স্বাস্থ্য পঃ পঃ কেন্দ্র                         :      ০৮ টি
            কমিউনিটি ক্লিনিক                                     :      ২৯ টি
            বেসরকারী ক্লিনিক                                     :      ৪৫টি
            বেসরকারী মেডিকেল কলেজ                        :      ০৩ টি
            পক্ষঘাতগ্রস্থদের পুনর্বাসন কেন্দ্র (সিআরপি)       :      ০১টি,
            সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ)      :       ০১ টি

ভূমি সংক্রান্ত তথ্য
           উপজেলা ভূমি অফিস                         : ০১ টি (সাভার উপজেলা ভূমি অফিস)
           সাকেল ভূমি অফিস                           : ০২ টি (আশুলিয়া ও আমিনবাজার, রাজস্ব সার্কেল, ভূমি অফিস)
          ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সংখ্যা               : ০৫ টি (বাগধনিয়া, ফুলবাড়ীয়া, বেগুনবাড়ী, আশুলিয়া ও শিমুলিয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিস)
         মৌজা সংখ্যা                                     : ২৮১ টি 

সংসদীয় এলাকা ও স্থানীয় সরকার সম্পর্কীত তথ্য

            বর্তমান ভোটার সংখ্যা (২০১৩)                      :       ৭৯৫৭৬৯ (পুঃ ৪২০৫৩৯, মঃ ৩৭৫২৩০)
            নির্বাচনী এলাকা                                         :       ০৩ টি  (ক) ১৯২ খ) ঢাকা-১৯ গ) ঢাকা-১৪                                                                
উপজেলা                                                  :       ১ টি
থানা                                                       :       ২ টি
পৌরসভা                                                  :       ১ টি - ওয়ার্ড ৯টি, মহল্লা ৫৫ টি
ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড                                       :       ১টি
ইউনিয়ন                                                  :       ১২ টি
গ্রাম                                                       :       ৩৭৩ টি
বিদ্যুতায়িত গ্রাম                                        :       ৩০৪ টি
স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা ব্যবহারের হার                 :       ৯৫%
রাস্তা          
               মোট                                                   :       ১১৪৭    কিঃ মিঃ
               পাকা                                                   :         ২৭৩     কিঃ মিঃ
               আঁধ পাকা                                            :        ১১৪       কিঃ মিঃ
              কাঁচা                                                    :         ৭৬০      কিঃ মিঃ


অন্যান্য প্রতিষ্ঠান সংক্রান্ত তথ্য

             শিল্পকারখানা                                 :       ক্ষুদ্র-৭৪৩ টি, ভারী-৯৫ টি, মাঝারী ৩৫০ টি।

ইপিজেড                                       :       ০২ (দুই) টিঃ  (১) ঢাকা ইপিজেড-০১ (পুরাতন)।
                                                                      (২) ঢাকা ইপিজেড-০২ (নতুন)।    
বিদ্যুৎ পস্নান্ট                                  :       ০১ টি (বিদ্যুৎ অফিস- ০৩ টি, বিদ্যৃৎ গ্রীড-০৫ টি)
গার্মেন্টস ইন্ডাষ্ট্রিজ                            :       ছোট বড় প্রায় ৫০০ (পাঁচশত) টি।
সেনানিবাস                                    :       ১ টি, নবম পদাতিক ডিভিশন (সাভার সেনানিবাস)
এনজিও (কর্মরত)                            :       ৫৩ টি
মসজিদ                                        :       ৮৮৯ টি
মন্দির                                          :       ৭৪ টি
চার্চ                                             :       ০৮ টি
ডাকবাংলো                                   :       ০১ টি (জেলা পরিষদের)
খাসবদ্ধ (পুকুর) জলমহাল                  :       ৫৮ টি
মাইক্রোওয়েভ স্টেশন                       :       ১ টি
         টেলিফোন সংযোগ ক্ষমতা                     :       ২২,৯২৪ টি ( পূর্বে ছিল-২৪০৯২ টি)
         টেলিফোন সংযোগ                              :       ১৩,২৫৮টি  (পূর্বে ছিল-১০০৫২ টি)
ফায়ার স্টেশন                                 :       ০২ টি
পত্রিকা                                         :       দৈনিক ০২ টি (দৈনিক ফুলকি ও দৈনিক
                                                                           জ্বালাময়ী) সাপ্তাহিক-১টি, পাক্ষিক-০২টি।
হোটেল ও রেস্টুরেন্ট                          :       ৩৩ টি
খাদ্য গুদাম                                     :       ০২ টি
ব্যাংক শাখা                                    :      ৩০ টি
প্রেক্ষাগৃহ                                        :       ০৫ টি
ডাকঘর                                         :       ১৯ টি
নৌ-বন্দর                                       :       সাভার নামা বাজার স্যালো-ঘাট, নয়ারহাট
                                                                      স্যালো ঘাট, আমিনবাজার লঞ্চ ঘাট ও
                                                                       আশুলিয়া লঞ্চ ঘাট
            হাট-বাজার                                     :    ১১ টি।

উল্লেখযোগ্য অন্যান্য গুরুত্বপূণ প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান :
        বাংলাদেশ লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র
        (বিপিএটিসি)।
        বাংলাদেশ প্রাণী সম্পদ গবেষণা ইনষ্টিটিউট।
        বাংলাদেশ আনবিক শক্তি কমিশন।
        শেখ হাসিনা জাতীয় যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র।
        কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন কেন্দ্র।
        বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (বিকেএসপি)।
        জাতীয় মাশরুম উন্নয়ন কেন্দ্র।

জাতীয় স্মৃতিসৌধ

অবস্থান : নবীনগর, পাথালিয়া ইউনিয়ন, সাভার, ঢাকা।
স্থাপতি: সৈয়দ মঈনুল হোসেন
উচ্চতা : ১৫০ ফুট

0/Post a Comment/Comments