স্বাক্ষর, সাক্ষর, অর্ধসাক্ষর, নিরক্ষর ও সাক্ষরতা কী?

স্বাক্ষর (Signature) :
স্বাক্ষর হল ব্যক্তির নিজ নাম বা দস্তখত। অর্থাৎ অক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন ব্যক্তি কোন কিছুতেই নিজের নাম দস্তখত যে বিশেষ সাংকেতিকতায় লিখেন তাই স্বাক্ষর বা signature। বর্তমানে শিক্ষিত ব্যক্তিগণ নিজ নিজ নামের স্বাক্ষর নিজস্ব মুন্সিয়ানায় প্রদান করেন, যাকে অন্য কেউ তা জার বা নকল করতে না পারেন।
সাক্ষর (Semi-Literate):
ইংরেজি Literate শব্দটির আভিধানিক অর্থ হল অক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন,শিক্ষিত বা সাক্ষর। এটি স+ অক্ষর = সাক্ষর, এর সমন্বয়ে গঠিত। অর্থাৎ অক্ষর বা বর্ণমালা দিয়ে লিখতে পড়তে পারার দক্ষতাকেই সাক্ষর বোঝানো হয়। কাজেই,যে ব্যক্তি অক্ষর জ্ঞান সম্পন্ন ব্যক্তির কোন কিছু লিখতে ও পড়তে পারার জ্ঞান, দক্ষতাকেি সাক্ষর বা Literate বলে। এছাড়াও,
” যে ব্যক্তি বোঝে,শোনে কোনো ভাষা পড়তে পারে তিনিই সাক্ষর ”
—– ১৯৬১ সালের আদমশুমারি
“যে ব্যক্তি দৈনন্দিন জীবন সম্পর্কে সহজ বিবরণ পড়ে, বোঝতে পারে এবং অন্যকে লিখে প্রকাশ করতে পারে সেই ব্যক্তিই সাক্ষর ”
——– UNESCO (2014)
অর্ধসাক্ষর ( Semi – literate):
যে সাক্ষরতা কার্যক্রমের মাধ্যমে ব্যক্তিকে পরিপূর্নভাবে সাক্ষর করে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয় কিন্তু পরিবেশ এবং পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে সে ঈপ্সিত উদ্দেশ্য হাসিল না হয়ে ব্যক্তি বা ব্যক্তাবর্গ পূর্ণাঙ্গ সাক্ষর হয় না আবার নিরক্ষরও থাকেনা, ব্যক্তির সেই অবস্থাকে অর্ধসাক্ষর বলে। কোনো সাক্ষর ব্যক্তি দীর্ঘদিন যাবত চর্চার বাইরে থাকলে তিনিও অর্ধ সাক্ষরে পরিণত হতে পারে। তবে একেবারে নিরক্ষর থাকার চেয়েও অর্ধ সাক্ষর অপেক্ষাকৃত ভালো।
নিরক্ষর (Illiterate) :
সাধারনত, যে ব্যক্তির কোনো অক্ষরজ্ঞান নেই তিনিই নিরক্ষর। অর্থাৎ, যে ব্যক্তি কোনো ভাষাগত বর্ণমালার প্রয়োগ করে নিজের নাম লিখতে পারেননা তিনিই নিরক্ষর বা Illiterate। আক্ষরিক অর্থে এদের মূর্খ বলা যায় তবে এদেরকে সাক্ষরতা কার্যক্রমের আওতায় এনে সাক্ষর করে তোলা যায়।
সাক্ষরতা (Literacy) :
মূলত এটি একটি কর্মসূচি। জাতীয় পর্যায়ে শিক্ষার উন্নয়নে গৃহীত কার্যক্রম। জাতীয় ভাবে দেশের নিরক্ষর জনগোষ্ঠীকে অক্ষর জ্ঞান দিয়ে সাক্ষর করে তোলার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ন কর্মসূচির বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াকেই সাক্ষরতা বা Literacy বলে। এছাড়াও, সাক্ষর, ব্যক্তির দক্ষতা বা ক্ষমতা। আর এ দক্ষতা অর্জনের প্রক্রিয়ায় হল Literacy। বর্তমানে বাংলাদেশ সরকার বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি গ্রহন করেছে। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল –
১) গণশিক্ষা কার্যক্রম
২) বয়স্ক শিক্ষা কার্যক্রম
৩) নৈশ শিক্ষা
৪) মন্দির ভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রম
৫) বৃত্তিমূলক শিক্ষা
৬) সার্বজনীন শিক্ষা
৭) অব্যাহত শিক্ষা
৮) বিশেষ শিক্ষা
৯) সবার জন্য শিক্ষা
১০) মূল্যবোধ শিক্ষা
১১) জীবন কেন্দ্রিক শিক্ষা।

0/Post a Comment/Comments