শিক্ষাক্রম: উপাদান ও প্রকারভেদ

শিক্ষাক্রমের উপাদান ও প্রকারভেব
শিক্ষার মাধ্যমে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে গড়ে তুলবার শক্তিশালী ও কার্যকর এবং প্রয়োগযোগ্য সুষ্ঠু সবল শিক্ষা সম্বদ্ধীয় পরিকল্পনা হল শিক্ষাক্রম। ইংরেজিতে curriculum ল্যাটিন শব্দ currer থেকে curriculum শব্দের উৎপত্তি। যার অর্থ ঘোড় দৌড়ের পথ। এখানে দৌড়ের মাধ্যমে নিদিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানোর ধারণা প্রকাশ করা হয়। শিক্ষাকে দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের পাথেয় হিসেবে ব্যবহার করে বিশাল জনগোষ্ঠীকে জনসম্পদে পরিণত করার জন্য অপরিহার্য হাতিয়ার হল শিক্ষাক্রম। শিক্ষাক্রমে কোন শিক্ষা পর্যায়ের কয়েক বছরের কর্মসূচি বা কাজের ইঙ্গিত
থাকে। এটি গোটা বৃক্ষের মত। এটি শিক্ষার্থীর পঠিতব্য বিষয়াদির সম্মিলিত রূপ। শিক্ষার্থীর সঠিক বিকাশের লক্ষ্যে কখন, কোথায়, কিভাবে, কততুকু সেখাতে হবে এবং কোন কোন দিক হাতে কলমে শিখবে তারই রূপরেখা হল শিক্ষা ক্রম। এক কথায় যে অনুক্রমিক সুগঠিত শিখন বিন্যাস এর সাহায্যে শিক্ষার্থীদের উপযুক্ত শিখন অভিজ্ঞতা অর্জন করিয়ে তাদের আচার-আচরন ও মনভাবে এমন পরিবর্তন আনা যা একজন দক্ষ নাগরিক গড়ে তুলতে সাহায্য করে।
শিক্ষাক্রমের উপাদান চারটি। যেমন- উদ্দেশ্য, বিষয়বস্তু, পদ্ধতি ও মূল্যায়ন।
বিভিন্ন প্রকার শিক্ষাক্রম-
১। বিষয় কেন্দ্রিক শিক্ষাক্রম।
২। সমন্বিত শিক্ষাক্রম- একাধিক বিষয় সমন্বয়। যেমন বিজ্ঞানে- পদার্থ বিগান,রসায়ন, জীব ইত্যাদি।
৩। শিক্ষার্থী কেন্দ্রিক শিক্ষাক্রম।
৪। সমস্যা কেন্দ্রিক শিক্ষা ক্রম- বাস্তব জীবন সমস্যা সমাধান ভিত্তিক।
৫। মৌল শিক্ষাক্রম- এতে বিষয় বিভাজন নীতি পরিহার করা হয়। 

জাতীয় শিক্ষাক্রম ২০১২-
--------------------------------
জাতীয় শিক্ষাক্রম ২০১২ একটি শ্রেণি এবং বিষয় ভিত্তিক সুনিদিস্ট দলিল, যেখানে শিক্ষার্থীদের ফলপ্রসূ পাঠদানের নিমিত্ত প্রয়োজনীয় সব তথ্য সন্নিবেশিত করা হয়েছে। একটি নিদিস্ট পাঠ অধ্যয়নের মাধ্যমে শিক্ষার্থী কি শিখনফল অর্জন করবে তা এখানে সুনিদিস্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। বাস্তব জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জনকে গুরুত্ব দিয়ে শিক্ষাথি কি জানে এবং তার ভিত্তিতে আর নতুন কি কি শিখতে পারে তা উল্লেখ করা হয়েছে। আই সিটির ব্যবহারে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। একই শিক্ষাক্রমের ভিত্তিতে আবশ্যিক বিষয় সমূহ সাধারণ, মাদ্রাসা, ইংরেজি, কারিগরি শাখায় ৬ষ্ঠ- ৮ম বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তন, প্রজনন স্বাস্থ্য, অরটিজম বিষয়বস্তুর অন্তর্ভুক্তি। বিজ্ঞান মনস্ক, যুক্তিবাদী, কর্মমুখী ও দক্ষ জনশক্তি সৃষ্টির উপর গুরুত্ব আরোপ। ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ভিত্তিতে অসম্প্রদায়িক মূল্যবোধ বিকাশের মাধ্যমে দেশাত্মবোধ ও জাতীয় ঐক্য অর্জনের উপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। মাতৃভাষা বাংলা ও আন্তর্জাতিক ভাষা ইংরেজি ভাষায় শোনা, বলা, পড়া ও লেখা এ চারটি ভাষায় দক্ষতা অর্জন। বিজ্ঞান বিষয়সহ অন্যান্য ব্যবহারিক কাজ আছে এ ধরনের বিষয়ের তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক অন্সের সমন্বয় সাধন। হাতে কলমে শেখা ও দলগত আলোচনা করে শেখার উপর গুরুত্ব প্রদান। একীভূত শিক্ষার উপর গুরুত্ব প্রদান। ধারাবাহিক, সামস্টিক মূল্যায়ন ও পাবলিক পরীক্ষা পদ্ধতির সংস্কার।

0/Post a Comment/Comments