গর্ভবতী হওয়ার উপযুক্ত সময় কোনটি তা জানার জন্য মায়ার পপুলার ‘ওভুলেশন ক্যালকুলেটর’ ব্যবহার করে আপনি হিসেব করতে পারেন কখন আপনার ‘ওভুলেশন(ডিম্বানু উৎপাদন)’ হচ্ছে আর কখন আপনার গর্ভাশয় গর্ভধারনের জন্য তৈরী । যদি আপনি ‘ওভুলেশনের(ডিম্বানু উৎপাদন)’ পর পর সহবাস করেন তাহলে আপনার গর্ভধারনের সম্ভাবনা সর্বাধিক । দিনটি সাধারনত আপনার শেষ মাসিকের প্রথম দিন থেকে ১২ দিনের মধ্যে ।
ডিম্বানু ডিম্বাশয় থেকে বের হওয়ার পর ডিম্বনালীতে যায়, সেখানে ২৪ ঘন্টা থাকে । যদি এই সময়ের মধ্যে শুক্রানু ও ডিম্বানুর মিলন না ঘটে তাহলে গর্ভধারন হবেনা । কিন্তু তার মানে এই নয় যে ওভুলেশনের(ডিম্বানু উৎপাদন) দিনই আপনাকে সহবাস করতে হবে । শুক্রানু ডিম্বনালীতে কয়েকদিন পর্যন্ত বাঁচতে পারে এবং ডিম্বানুর সাথে মিলে ভ্রুণ তৈরী করতে পারে । যদি আপনি অভুলেশনের(ডিম্বানু উৎপাদন) ২-৩ দিন আগেও সহবাস করেন তাহলেও গর্ভধারনের সম্ভাবনা থাকবে কারন শুক্রানু ডিম্বনালীতে ডিম্বানুর জন্য ‘অপেক্ষা’ করবে ।
কখন ওভুলেশনের(ডিম্বানু উৎপাদন) হয় ?
ওভুলেশনের(ডিম্বানু উৎপাদন) সঠিক সময় নির্নয় করা কঠিন । বেশিরভাগ মহিলার ক্ষেত্রে সাধারনত হয় পরবর্তি মাসিকের ১০-১৬ দিন আগে ।
মাসিক চক্র গননা করা হয় মাসিকের প্রথম দিন থেকে । কখনো কারো কারো মাসিকের পর ‘ওভুলেশন(ডিম্বানু উৎপাদন)’ হবে এবং তার ১০-১৬ দিন পর আবার মাসিক হবে । গড়ে চক্রটি ২৮ দিনের, তবে কম বা বেশি হতে পারে । মাসিক চক্র নিয়মিতভাবে ২৮ দিনের না হলে একথা কখনই জোর দিয়ে বলা যাবেনা যে কারো গর্ভাশয় ১৪ দিনের দিনই গর্ভধারনের জন্য তৈরী । যদি কারো মাসিকচক্র ৩৫ দিনের হয় তাহলে তার জন্য তা হবে ১৯-২৫ তম দিনের মধ্য , আর কারো চক্র ২৩ দিনের হলে তা হবে ৭-১৩ তম দিনের মধ্যে ।
যেহেতু শুক্রানু ডিম্বনালীতে ২-৩ দিন পর্যন্ত বাঁচতে পারে তাই যাদের মাসিকচক্র অনিয়মিত তাদের পরামর্শ দেয়া হয় প্রতি দুই দিন পর পর সহবাস করতে , এতে গর্ভধারনের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায় ।
যদি আপনার মনে হয় আপনি গর্ভবতী তাহলে আপনার শেষ মাসিকের তারিখের সাথে হিসাব করুন এবং নিশ্চিত করুন ।
গর্ভধারন এড়াতে
আপনি যদি গর্ভধারন এড়াতে চান তাহলে বেশ কয়েকটি পদ্ধতি আছে যা আপনি অবলম্বন করতে পারেন । কনডম একমাত্র পদ্ধতি যা আপনার গর্ভধারন এবং যৌনরোগ সংক্রমন উভয়ই রোধ করতে পারে ।
কখন ওভুলেশন(ডিম্বানু উৎপাদন) হবে সঠিকভাবে তা জানা যায়না । সেক্ষেত্রে যদি আপনি গর্ভধারন এড়াতে চান তাহলে মাসের কোন সময়ই অরক্ষিত সহবাস নিরাপদ নয় । যারা গর্ভধারন করতে চাননা তাদের জন্য অরক্ষিত সহবাসের ঝুঁকি না নেয়াই ভাল ।
যেসকল মহিলার মাসিকচক্র অল্পদিনের তারা যদি মাসিকের সময়ও সহবাস করে তখনও তাদের গর্ভধারনের সম্ভাবনা থাকে । শুক্রাণু গর্ভনালীতে ৭ দিন পর্যন্ত বাঁচতে পারে এবং তাদের ক্ষেত্রে সম্ভাবনা থাকে মাসিকের পর পরই ডিম্বানু উৎপাদনের ।
গর্ভধারন এড়ানোর সবথেকে ভাল উপায় হল নিজের শরীর , মাসিকচক্র সম্পর্কে জানা । যোনিপথের তরলের ধরন পরীক্ষা , দৈনিক শরীরের তাপমাত্রা নির্নয় এবং মাসিক চক্রের একটি পঞ্জিকা অনুসরন আপনাকে সাহায্য করবে কখন ওভুলেশন(ডিম্বানু উৎপাদন) হতে পারে তা নির্ধারন করতে ।
যোনিপথের তরলের অবস্থা আপনার মাসিকের দিনের সাথে সাথে পরিবর্তিত হয় । যখন আপনার অভুলেশন(ডিম্বানু উৎপাদন) হবে তখন তরলটি পাতলা, সাদা, অনেকটা ডিমের সাদা অংশের মত দেখাবে । শরীরের তাপমাত্রা ৪-৬ ডিগ্রী ফারেনহাইট বৃদ্ধি পাবে । তলপেটে সামান্য ব্যথার সাথে এসকল অনুসর্গ ৪-৫ মাস ধরে আপনি লক্ষ্য করেন তাহলে আপনার ওভুলেশনের(ডিম্বানু উৎপাদন) সময় নির্ধারন করতে পারবেন । নিজে না পারলে বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিন ।
আপনার শারীরিক ইঙ্গীত শতভাগ সঠিক নাও হতে পারে,তাই যে কোন ধরনের জন্মনিয়ন্ত্রনকারী পদ্ধতি ব্যবহার করা নিরাপদ । সবথেকে কার্যকর পদ্ধতি হলো ‘এল আর সি’।
জরুরি গর্ভনিরোধক
অরক্ষিত সহবাস অথবা কোন কারনে জন্মনিরোধক পদ্ধতি কাজ করলোনা , সেক্ষেত্রে জরুরি গর্ভনিরোধক অপরিকল্পিত গর্ভধারন রোধ করতে পারে ।
দু’ধরনের পদ্ধতি রয়েছে-
১। জরুরি জন্মনিয়ন্ত্রঙ্কারী বড়ি (মর্নিং আফটার পিল নামে পরিচিত) , অরক্ষিত সহবাসের ৭২ ঘন্টার মধ্যে খেতে হবে
২। আই ইউ ডি , যা অরক্ষিত সহবাসের বা অভুলেশনের সম্ভাব্য ৫ দিনের মধ্যে জরায়ুমুখে লাগাতে হবে ।
মর্নিং আফটার পিল ঢাকার যে কোন ওষুধের দোকানে পাওয়া যাবে । আই ইউ ডি লাগানোর জন্য আপনার অভিজ্ঞ ব্যক্তির প্রয়োজন হবে । এর জন্য আপনার হাসপাতালে ভর্তির কোন প্রয়োজন নেই ।
- মায়া আপা
Post a Comment