শিক্ষাদানের যে কৌশল বাস্তব অবস্থার কাছাকাছি একটি কৃত্রিম পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে কোন বিষয় সম্বন্ধে শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রকৃত ধারণা চিত্রায়নের চেষ্টা করে তাকে সিমুলেশন
বলে। এ পদ্ধতিতে অংশগ্রহণকারীগণ ছাত্র, শিক্ষক এবং মূল্যায়নকারীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়। এতে শিক্ষক সাহায্যদানকারী ও প্রেষণাদানকারীর ভূমিকা পালন করেন।
সিমুলেশনের মাধ্যমে অংশগ্রহণকারী শিক্ষক পরিকল্পিতভাবে পাঠ উপস্থাপন করেন। তার পাঠ উপস্থাপনের দুর্বলতাগুলোকে তারই সহকর্মী প্রশিক্ষণার্থী শিক্ষক গঠনমূলক আলোচনা/সমালোচনার মাধ্যমে শুধরে নিতে সাহায্য করেন।
একজন প্রশিক্ষণার্থী শিক্ষককে দিয়ে যদি একই বিষয়ে বা বিভিন্ন বিষয়ে সিমুলেশন-এর মাধ্যমে কয়েকটি পাঠ উপস্থাপন করানো যায় এবং ফলাবর্তনের মাধ্যমে তাকে শুধরে নেওয়া যায় তাহলে শিক্ষক হিসেবে কার্যসম্পাদনের জন্য তার মধ্যে আত্মবিশ্বাস, ধৈর্য, ধীর-স্থির ও গতিশীল মনোভাব সৃষ্টি হবে। শিক্ষার্থীদের সমস্যা শোনার এবং সমাধানের মানসিকতা সৃষ্টি হবে।
এ পদ্ধতিতে শিক্ষক সার্বিক তত্ত্বাবধায়ক, পথ প্রদর্শক, পরামর্শক হিসেবে শিখনকে কর্মকেন্দ্রিক করে তোলেন। এ কর্মকেন্দ্রিকতার কারণেই শিক্ষা হয়ে ওঠে আনন্দদায়ক ও ক্লান্তিহীন। তথ্য সরবরাহ, তৎপরতা এবং সংশ্লেষণের দরুন অংশগ্রহণকারীদের অনেকগুলো ইন্দ্রিয় এ ব্যবস্থায় শিখনে ব্যবহার করা যায়।
বক্তৃতা ছাড়াও সিমুলেশনে প্রশ্নোত্তর, আলোচনা, প্রদর্শন, আরোহী-অবরোহী, শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক প্রভৃতি পদ্ধতি প্রয়োগের সুযোগ রয়েছে। এতে অংশগ্রহণকারীর জ্ঞান, দক্ষতা, আচরণ ও দৃষ্টিভঙ্গিতে কাঙ্খিত পরিবর্তন সাধিত হতে পারে। অংশগ্রহণকারীর মধ্যে এ ধরনের পরিবর্তনের ফসল হিসেবেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সমাজ ও রাষ্ট্র লাভ করে গুণগত মানসম্পন্ন ভালো শিক্ষক।
Post a Comment