পাকিস্তান শাসনামলে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে চাকরি পাওয়ার জন্য নুন্যতম শিক্ষাগত যোগ্যতা ছিল পঞ্চম শ্রেণী পাশ। পরবর্তীতে এটি মাধ্যমিক পরীক্ষা পাশে উন্নীত করা হয়। নূন্যতম নম্বর নিয়ে যারা মাধ্যমিক পরীক্ষা পাশ করত, তারাই প্রাথমিক পাওয়ার চেষ্টাই এদেরকে স্কুলে আসাটা অব্যাহত রাখত। বিদ্যালয়ে শিক্ষকতায় ঢুকত। ছাত্রাবস্থায়
এদের অনেকেই একাধিক বার ফেল করা। কোন রকম প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা ছিল না। এরকম ঠায় দাঁড়িয়ে থাকা স্কুল থেকে সাফল্য অস্বাভাবিক ব্যাপার। সাফল্য যদি কিছু ঘটত তার দাবিদার একমাত্র ছাত্রটি নিজে এবং তার অভিভাবকের নিরলস প্রচেষ্টা। স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান প্রাথমিক শিক্ষাকে জাতীয়করণের মাধ্যমে ভবিষ্যত প্রজন্মের প্রাথমিক শিক্ষার দায়িত্বভার সরকারের উপর ন্যস্ত করেন। বর্তমানে প্রাথমিক শিক্ষকদের ভাল বেতন এবং সামাজিক অবস্থানের কারণে উচ্চ ডিগ্রীধারীরাও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার পেশা বেছে নিচ্ছেন। অনেক বেসরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের চেয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বেতন কাঠামো ভাল এবং চাকুরী পেনশনযোগ্য। সরকার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকতার ক্ষেত্রে মহিলাদের ৬০ শতাংশ কোটা নির্ধারণ করেছে। মহিলাদের প্রাথমিকস্তরে ব্যপকভাবে অংশগ্রহণ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিবেশকে শিক্ষার্থীদের জন্য আরো সহজ ও বান্ধব করে তুলবে বলে সকলেই বিশ্বাস করেন। বর্তমানে ৬০ শতাংশ নারী কোটা এবং ২০ শতাংশ পোষ্য ও ২০ শতাংশ পুরুষ কোটার বিধান রেখে শিক্ষক নিয়োগের জন্য নিয়মিতভাবে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। জাতীয়ভাবে নিয়ন্ত্রিত পরীক্ষার মাধ্যমে এই নিয়োগ প্রক্রিয়া সাধারণ জনগণ, গণমাধ্যম ও দাতা সহযোগী সংস্থা সমূহ কর্তৃক ইতোমধ্যেই প্রশংসিত হয়েছে। উন্নয়নে মহিলাদের উৎসাহিত করার জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতা মাধ্যমিক পাশ পর্য্যন্ত শিথিল করা হয়েছে। সম্প্রতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের দ্বিতীয় শ্রেণীর মর্যাদায় উন্নীত ও ১২তম গ্রেডে বেতন নির্ধারিত করা হয়েছে। কোমলমতি শিশুদের ভবিষ্যতের দক্ষ নাগরিক করে গড়ে তোলার জন্য সরকারী সদিচ্ছার অভাব নেই।
Post a Comment